তাই বিচ্ছেদের মামলা চালিয়ে থাকেন এমন আইনজীবীরা ফেসবুককে বেছে নিচ্ছেন বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ তথা প্রতারণার প্রমাণ হিসেবে৷
সাম্প্রতিক এক জরিপের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক পোস্ট জানিয়েছে, ৮২ শতংশ বিবাহ বিষয়ক আইনজীবী মনে করেন, গত পাঁচ বছরে বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটগুলো থেকে নেয়া নানা তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে৷
আর যেসব সাইবার তথ্য সাক্ষ্য প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে তার একটা বড় অংশ জুড়ে আছে ফেসবুকে প্রেমিক/প্রেমিকাকে পাঠানো বার্তা বা সেখানে প্রকাশিত নানা ছবি৷
বিবাহ বিচ্ছেদে ইন্টারনেটের অবদান নিয়ে এই সমীক্ষা চালিয়েছে অ্যামেরিকান অ্যাকাডেমি অব ম্যাট্রিমোনিয়াল লইয়ার্স৷ সংগঠনটির সহ-সভাপতি কেন আল্টশুলার জানিয়েছেন, গত ছয়মাসে আমি যতজন মক্কেল পেয়েছি তাদের সবার ফেসবুক পাতা রয়েছে৷ আর আমি তাদেরকে প্রথমে যে উপদেশটা দিয়েছি, তাহলো ফেসবুক পাতা বন্ধ কর৷
সমীক্ষায় অংশ নেয়াদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ জানিয়েছেন বিবাহ বিচ্ছেদে তারা ফেসবুক থেকে নেয়া বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সাক্ষী হিসেবে ব্যবহার করেছেন৷ অন্যদিকে মাইস্পেস থেকে তথ্য নিয়েছেন ১৫ শতাংশ আর টুইটার থেকে মাত্র ৫ শতাংশ ব্যক্তি৷
আল্টশুলার তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, কিছুদিন আগে এক মহিলা আমার কাছে এসেছিলেন বিবাহ বিচ্ছেদের দাবি নিয়ে, কারণ ছিল তার স্বামীর মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান৷ কিন্তু আদালতে মহিলার স্বামী জানালো তিনি মদ্যপান মাস কয়েক আগেই ছেড়ে দিয়েছেন৷ তারপরও বাধ সাধলো ফেসবুক৷ সেখানে পাওয়া এক ছবিতে দেখা গেল ভদ্রলোক আদালতে উপস্থিত হবার সপ্তাহ তিনেক আগেও মুখে মারিওয়ানা আর দু'হাতে বিয়ারের বোতল নিয়ে এক পার্টিতে ছবি তুলেছিলেন৷
অনেকে অযথা ফেসবুকে ভুল তথ্য দিয়েও নাকি বিচ্ছেদ মামলার শিকার হচ্ছেন৷ এমনই এক উদাহরণ দিয়ে আল্টশুলার জানান, দিন কয়েক আগে এক মক্কেল এসে জানালো তার স্ত্রী নাকি ফেসবুকে নিজের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেছে বলে খবর দিয়ে নতুন সঙ্গী খুঁজছেন৷ এই দুঃখে আসল বিচ্ছেদ চান তিনি৷ কিন্তু আদালতে সেই মহিলা জানালেন, স্বামী কতটা সহনশীল তা পরীক্ষা করতে ফেসবুকে এমন কথা লিখেছিলেন তিনি৷
আর তাই, আল্টশুলার এর মন্তব্য, কে কে দেখছে তা না জেনেই ফেসবুকে যাতা লিখতে যাবেননা৷ কারণ আপনার মন্তব্যই আপনার সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে৷
প্রতিবেদক: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক